‘মরণ রে তুঁহু মম শ্যামসমান’

‘মরণ রে তুঁহু মম শ্যামসমান’

-রীণা চ্যাটার্জী

 

অমোঘ মৃত্যু …….’তুঁহু মম শ্যামসমান’

শিশু বয়সে প্রথম প্রিয়জন হারানোর ব্যাথায়

তোমার নামে নতুন পরিচিতি জীবনে পাতায়।

বুঝলাম তুমি আসা মানে শুধু হারিয়ে যাওয়া

মনের কোণে অশ্রু, স্মৃতির আঁক কেটে দেওয়া।

ভীষণ নির্লিপ্ত তুমি, অমোঘ একটি নীরব ডাকে

নিষ্ঠুরতার ঘাত-প্রতিঘাতে ভরিয়ে যাও শোকে।

শুধু মেনে নেওয়া, অসহায় বাধ্যতার সাড়া

নিয়ত বাস্তব তুমি শুধুই নিঠুর উপলব্ধি ভরা।

নিশ্চিহ্ন করে দাও অনিচ্ছুক প্রাণ অসীম অহঙ্কারে

রক্তাক্ত, বিক্ষত, বিবর্ণ আবরিত রূপ শুভ্র চাদরে।

জীবনকে বিদায় জানাতে এক নিদান ছাড়পত্র

লিখতে কি পেরেছো জীবনের মতো প্রেমপত্র।

জীবন মানে রঙীন পৃথিবী, মন মাতানো সাজে

জানি তবু সে পরাস্ত বারেবারে তোমার কাছে।

জীবন জানে আনন্দ, কলরব, উষ্ণতা নিঃশ্বাসে

স্তব্ধ করো তারে স্পর্ধিত দাম্ভিক কলেবরের বিষে।

জীবন শিকড় ছড়িয়ে ভরিয়েছে পেলব সজীবতা

ব্যর্থ তুমি, তোমার ঝুলিতে কেড়ে নেবার সফলতা।

শোকে বিহ্বল অভিসম্পাতে হোও নি কভু লাঞ্ছিত?

মনে কি হয়নি কোথাও তুমি অবাঞ্ছিত, পরাজিত!

জানে জীবন, তুমিই আসবে নিয়ে শেষ পরিণতি

হাসে জীবন, দেখে তোমার ভয় দেখানো দুর্মতি।

অবিরত ধায় জীবনের সাথে তোমার দ্বন্দ খেলা

মুক্তির আকুতি নিয়ে অপেক্ষায় সেও শেষবেলা।

যার জন্য লিখে দাও তুমি শেষ খোলা পত্রখানি

শান্তি, অপার শান্তি শোনে সে মরণের হাতছানি।

বাহুপাশে দিও মুক্তির, শান্তির শীতল আলিঙ্গন

বলে জীবন তোমায়, ‘মরণ রে তুঁহু মম শ্যামসমান’।

Loading

4 thoughts on “‘মরণ রে তুঁহু মম শ্যামসমান’

Leave A Comment